আজ মঙ্গলবার, ১৯শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুই শীর্ষ নেতা মূলদলে, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগ যেন এতিম 

বয়স বেড়েছে তবুও তারা যুবক !

 যেকোন সময় আহবায়ক কমিটি করা হবে- আবদুল কাদির
 সম্মেলন না হওয়ার সম্ভবনাই বেশী- বাদল

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
২০০৭ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আংশিক একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির সভাপতি আবদুল কাদির ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল ইতিমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের মূল কমিটিতে পদ পেয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে বাদল ও সহ সভাপতি পদে আবদুল কাদির রয়েছেন। ওই আংশিক কমিটিকে পূর্নাঙ্গ করা হয় ২০১০ সালে। বছরের পর বছর চলে যাওয়ার পরেও বয়স্করাই বহাল রয়েছে ওই কমিটিতে। যার ফলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে জেলা যুবলীগ। এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা।

জানা যায়, ভিপি বাদল ও আবদুল কাদিরের মত অনেক নেতাই এখন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। যার কারণে দিনের পর দিন নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়েছে জেলা যুবলীগ। কবে নাগাদ জেলা যুবলীগের কমিটি করা হবে তা এখনও অনিশ্চিত।

২০১০ সালে কেন্দ্র ঘোষিত জেলা যুবলীগের করা পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ সভাপতি করা হয় হুমায়ন কবির, মো. বাবু, মো. ইকবালকে। এছাড়াও ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মো. তানভির, প্রচার সম্পাদক আবদুল কাদের, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শরীফ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. লিটন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয় শাহ ফয়েজ উল্লাহকে। ৯ বছর ধরে যারা এখানো একই পদে বহাল রয়েছেন।

মাঠ পর্যায়ের একাধিক নেতাকর্মীদের মতে, জেলা যুবলীগ নেতৃত্ব শূণ্য হয়ে পড়ায়  সোনারগাঁ, বন্দর ও ফতুল্লা থানা কমিটিগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। জেলা যুবলীগের অস্তিত্ব রক্ষার্থে জেলা ও মহানগরসহ থানা কমিটিগুলো পুন:গঠন করা প্রয়োজন। নতুন নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনগুলো আরও শক্তিশালী হবে বলে মনে করছেন তারা।

সূত্র জানায়, ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবদুল কাদির ও ভিপি বাদল ছিলেন নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলয়ে। উপজেলা নির্বাচনে বিরোধের পরেও দু’জনকে শামীম ওসমানের সাথে দেখা গেছে। তবে ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শামীম ওসমানের পক্ষে ছিলেন ভিপি বাদল অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে ছিলেন আবদুল কাদির। আর সেই থেকেই দ্বন্দ্বের শুরু। এর রেশ ধরেই জেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতারা দুই ভাগে বিভক্ত। উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বিভাজনে তারা আলাদা কর্মসূচী পালন করে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আবদুল কাদিরকে মুঠোফোন করা হলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চার প্রতিবেদককে বলেন, কমিটি দেয়ার বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশনা অত্যন্ত জরুরী। আমি ব্যক্তিগত ভাবেও কমিটির বিষয়ে আলোচনা করেছি। তবে আশা করি খুব শীঘ্রই জেলা যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি করা হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হলেও যেকোন সময় আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে। অন্যদিকে দেশের বাইরে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ভিপি বাদলের সাথে।

একি বিষয়ে জানতে চেয়ে মুঠোফোন করা হয় কমিটির প্রচার সম্পাদক আবদুল কাদেরের কাছে। তিনি বলেন, নতুন কমিটি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে কিন্তু কেন্দ্র থেকে এখনোও কোন সিদ্ধান্ত আসে নাই। অনেকেই সম্মেলন চাচ্ছেন আবার অনেকেই চাচ্ছে না। তবে কেন্দ্র থেকে কোন অনুমোদন না আসা পর্যন্ত সম্মেলন না হওয়ার সম্ভবনাই বেশী।

এদিকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টদের মতে, মেরু কেন্দ্রীক রাজনীতি করতে গিয়েই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহযোগী একটি সংগঠন তথা জেলা যুবলীগ দিন দিন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে।